নতুন করে ইসলাম বিরোধী ন্যারেটেভ দাঁড় করানোর স্বরূপ

গতকাল দ্যা বিজনেস একটি রিপোর্ট করেছে। সেখানে তারা কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে চারজন ব্যাক্তি কে দোষারোপ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো হাসিনা আমলের মামলা কে উল্লেখ করে তাদের জঙ্গি বানানোর চেষ্টা হচ্ছে।

দেশের ইসলামপন্থীদের আলাদা করে রাখার মানসিকতা এদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। তাই তারা চায় না মুসলিম কেউ রাজনীতি সচেতন হোক। রাজনীতি নিয়ে ভাবুক। তারা তারচেয়ে বেশী চায়না কেউ শারি’আ আইনের কথা বলুক।

কাঠামোগত ইসলাম বিদ্বেষের কারনে ইসলামিষ্টদের কোন কর্মকাণ্ডকে-ই তারা পছন্দ করে না। পাশাপাশি তাদের পেছনে অর্থ ঢালার জন্য রয়েছে পার্শ্ববর্তী হিন্দু রাষ্ট্র ভারত। এদেশে সর্বদা একটা গোলযোগ পাকিয়ে রাখায় হচ্ছে ওদের কাজ।

দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর কি অবদান রয়েছে জুলাইয়ের আন্দোলনে। তাহলে আজকে এসে কারা জুলাই আন্দোলনের শক্তি আর কারা বিরোধী শক্তি এই আলাপের তারা কে? হাসিনা আমলের সকল মামলা কে বৈধতা দেওয়ার তারা কে?

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার হাসিনা রেজিমের পুরো সময় কট্টর ইসলামের বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছে রাখঢাক না করেই। শত-শত মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন করে তাদের কে জনগণের সামনে জঙ্গি হিসেবে উপস্থাপন করেছে। ভিকটিম জনতা সাধারণত-ই আন্দোলন পরবর্তী সময় এগুলোর কৈফিয়ত চাইতে পারে। তাদের অফিসের সামনে একত্র হতেই পারে। কারণ এসব জনতা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের প্রপাগান্ডার স্বীকার। এই বিষয় কে জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদ বলার কোন অধিকার নেই। বরং এটা ব্যাক্তি অধিকার। হাসিনার বাড়ি ভাঙা যেমন স্বাধীনতার প্রমাণ, তেমনি হাসিনার দোসর প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের দপ্তর ভাঙাও তাই হওয়া উচিত।

কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময় কোন এক অদৃশ্য হাতের ইশারায় প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কিছুই হতে দেওয়া হয়নি। তাইতো মাঝেমধ্যে আশংকা তৈরি হয় আমরা কি আসলেই স্বাধীন হতে পেরেছি? না-কি এক শত্রুর হাত থেকে আরেক শত্রুর হাতে বদল হয়েছি। এতোগুলা তাজাপ্রাণ কি আমাদের স্বাধীনতার জন্য উৎসর্গ করেছি না-কি অজান্তেই তৃতীয় কোন শক্তির জন্য খরচ করেছি?

বাংলাদেশ ভারত থেকে বিভক্ত হয়েছিল বৃটিশ বা পশ্চিমাদের তাঁবেদারি করার জন্য নয়। তারা ভারত থেকে বিভক্ত হয়েছিল একটি ইসলামি সমাজ ও ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করার জন্য। প্রতারক জিন্নাহ মুসলমানদের সাথে গাদ্দারি করে। এবং এই রাষ্ট্র কে একটা স্যাকুলার রাষ্ট্র ঘোষণা করে। মোটেও এই রাষ্ট্র স্যাকুলার রাষ্ট্র হবার জন্য ডারত থেকে বিভক্ত হয়নি। এটি এমন এক রাষ্ট্র যার নব্বই ভাগ মানুষ মুসলমান। এখানে ইসলামি রীতিনীতি এবং ইসলামি কালচার কে সম্মান প্রদর্শণ করা স্বয়ং রাষ্ট্রের জন্যও আবশ্যাক। এমন রাষ্ট্রের বইমেলায় ইসলাম বিদ্বেষী এক নষ্টা লোকের বই বিক্রি করাটা অন্যায়। সেই অন্যায় কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে বিক্রমপুরি হয়ে যায় জঙ্গি। তাহলে নতুন করে ভাবতে হবে আসলেও কি আমরা স্বাধীন না-কি রক্ত দিয়েও পরাধীন?

শাহবাগের ফুটপাতে দুচারজন ছোকরা মিলে পশ্চিমাদের মতো উলঙ্গ চলাফেরা করতে চায়। তারা প্রকাশ্যে বিড়ি, সিগারেট খায়। গাঁজা খায়। দিনের পর দিন গোসল করে না। এসব মস্তিষ্ক বিকৃত ছোকরারা না দেশের কোন কাজে আসে না সমাজের। বরং এরা দেশ ও সমাজের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। এদের শরীরের দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এদের সিগারেট পানের কারণে পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে সাথে সাথে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে। জনগণের কষ্ট হচ্ছে। তারপরও কেন তাদের এই অযৌক্তিক দাবি মানতে হবে? বোঝায় যায় এক্ষেত্রেও কাঠামোগত ইসলাম বিদ্বেষ আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ কে গ্রাস করেছে। তাহলে ধরে নেব এই রাষ্ট্র আর জনগণের হাতে নেই, রাষ্ট্র এখন অন্য কারো হাতে? কে সে?

রাস্তায় যখন কোন মেয়ে উলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করে, পুরুষ মাত্রই তার ভেতরে একটা নোংরা চিন্তা চলে আসে। যা একজন মুসলমানের তাকওয়ার জন্য ক্ষতিকর। আবার যদি মাসটা হয় রামাদান তাহলে তা রোজার জন্যও ক্ষতিকর। ব্যাক্তি স্বাধীনতার নাম দিয়ে অন্যের ক্ষতি করা কতটুকু যৌক্তিক?

ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোর একটি হলো সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা। যেহেতু বাঙালী জাতির ৯০% মানুষ মুসলমান তাহলে এই সমাজে এই আইন প্রয়োগ করা কোন অন্যায় নয়। আর এতটুকু কারণে কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা, মামলা দেওয়া কতটুকু আইনের কাজ হলো? একটুও না। এই লোক কে ছাড়াতে কিছু সাধারণ মুসলিম থানায় গিয়ে ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়ে আসাকে যদি কেউ থানায় হামলা বলে উল্লেখ করে, তাহলে কি বুঝে আসেনা যে তারা ভিন্ন কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে!

শেষ কথা হলো এদেশে আমরা মুসলিমরা ইসলামের সকল বিধান পালন করবো। যাদের কে এর বিরুদ্ধে পাবো ধরে নেব ওরা বাহিরের শক্তি। সামাজিকভাবে এই দেশে ইসলামের সকল আইন বাস্তবায়ন হবে। কেউ যদি বাধা দিতে আসে এদেশের মুসলিম জনসাধারণের সাহায্যে তার কালো হাত গুড়িয়ে দেওয়া হবে। সকল ইসলামি আইন পালন করা একজন মুসলিম হিসেবে আমার ইসলামি অধিকার। আমার অধিকার কেড়ে নিলে আমি কি বসে বসে দেখবো?

আমাদের এদেশে পশ্চিমা আদর্শ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটা রুপান্তরিত ব্যাক্তি কে মেয়েদের পুরষ্কার দেওয়া যেমন নারী সমাজের সাথে ঠাট্টা করা, তেমনি ইসলামি আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা। আমরা এই আস্পর্ধা মেনে নেব না। মুসলিম সমাজ সরকারের এই সিদ্ধান্ত কে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। নারী সমাজের সাথে ঠাট্টা করায় নারী সমাজ সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কে বহিরাগতদের ষড়যন্ত্র বলেই বিশ্বাস করে।

আগামী তে এই মাটিতে পশ্চিমাদের এমন নষ্টামি করার সাহস যেন কারো না হয়, সেজন্য সচেতন মুসলিম সমাজ ও তাদের নেতৃত্বে থাকা আলেম উলামা কে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *